*গোদাগাড়ীতে ২০ গ্রাম হেরোইন সহ ১ জন মহিলা আটক* গোদাগাড়ীতে ৩১৮ বোতল ফেন্সিডিল সহ ১জন ধৃত* রিভিউ খারিজ, প্যানেলভুক্ত শিক্ষক নিয়োগের পথ খুলল* গোদাগাড়ীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য স্মরণিকা-২০১৫ মোড়ক উন্মোচন ও নবনির্বাচিত মেয়রদের সংবর্ধনা প্রদান*"

রাজনীতি

গোদাগাড়ীতে মাছ চাষের নামে পুকুর লীজ নিয়ে ভরাট করার অভিযোগ
পিরিজপুর প্রতিনিধি:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় মাছ চাষের নামে সরকারী খাস পুকুর লীজ নিয়ে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুকুরটি ভরাট করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ পেয়ে গোদাগাড়ীর অতিরিক্ত কমিশনার (ভূমি) আলমগীর কবীর তাঁর দপ্তরের একজন তহশিলদারকে বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই প্রতিবেদনটি ভূমি কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিল হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার জাহানাবাদ এলাকায় রাজশাহী-চাঁপাই মহাসড়কের পাশে শূণ্য দশমিক ৪৪ শতকের একটি খাস পুকুর বাংলা ১৪২১-২৩ পর্যন্ত ৩ বছরের জন্য বার্ষিক ৩ হাজার টাকায় লীজ নেন স্থানীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির পে ফজলুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর বাগডাঙা এলাকার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী টিপু নামের এক ব্যক্তির কাছে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে পুকুরটি হস্তান্তর করে দেন। পুকুরটির পাশেই টিপুর ধানের চাতাল ও অটো রাইস মিল রয়েছে।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই পুকুরটির প্রায় ৭০ ভাগ অংশের ভরাট কাজ শেষ। এ পুকুর ভরাটকারী টিপুর সঙ্গে কথা বলতে তাঁর অটো রাইস মিলে গেলেও তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর নিকাটাত্বীয় ও ব্যবসায়ীক তত্বাবধায়ক সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি দাবি করলেন, পুকুরটির ভেতরে টিপুর কিছু জমি রয়েছে, তাই ভরাট করা হচ্ছে। কিন্তু পুকুরের তিন-চতুর্থাংশ ইতিমধ্যেই ভরাট করে ফেলা হয়েছে কেন? জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
পুকুরটির লীজ গ্রহীতা ফজলুর রহমান বলেন, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি টিপুর কাছে পুকুরটি হস্তান্তর করে দিয়েছেন। টিপু তাঁকে মাছ চাষের কথাই জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি পুকুরটি ভরাট করছেন। এর সম্পূর্ণ দায় তাঁর, যোগ করেন ফজলুর রহমান।
জানতে চাইলে গোদাগাড়ীর অতিরিক্ত কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আলমগীর কবীর বলেন, সরকারী পুকুর মাছ চাষের নামে লীজ নিয়ে ভরাট করার কোন বিধান নেই। কিন্তু এমন অভিযোগ পেয়ে তিনি একজন তহশিলদারকে বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই প্রতিবেদন হাতে আসার কথা। তদন্তে পুকুর ভরাটের বিষয়টি উল্লেখ থাকলে টিপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

 

 

গোদাগাড়ীতে ২১ আগষ্টের স্মরণে মানববন্ধনঃ
 শিার্থীদের রাস্তায় নামানো নিষিদ্ধ থাকলেও মানববন্ধনে এসে প্রচন্ড রৌদ্রে অসুস্থ্য অনেক শিাক্ষার্থী
সারোয়ার সবুজ, গোদাগাড়ী: গোদাগাড়ী সদরের ৫ মাথার মোড়ে গোদাগাড়ী উপজেলা ও গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অয়েজ উদ্দীনের সভাপতিত্তে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও এমপি মিসেস আক্তার জাহান, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বদরুজ্জামান রবু মিয়া। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর আ’লীগের সেক্রেটারী রবিউল আলম, রাজশাহী জেলা শাখার যুবলীগের সেক্রেটারী অধ্যাপক আসাদ্জ্জুামান আসাদ, কৃষকলীগ নেতা বদিউজ্জামান, প্রফেসর আকবর আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে উপজেলা আওয়ামীলীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার ছাত্র/ছাত্রী ও শিকরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে র‌্যালী করে ডাইংপাড়া গোলচত্তরে এসে হাইওয়ের দু’ধারে ব্যানার সহ সমবেত হয়ে দুপুর সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মানববন্ধন করে। সভায় ২১ আগষ্টের নির্মম ঘটনা তুলে ধরে বক্তারা বলেন অবিলম্বে এর দোসরদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং এ ধরনের কর্মকান্ড যাতে আর না ঘটে তার জন্য দৃড় প্রত্যয় ব্যক্ত করতে হবে। তবে স্কুল/মাদরাসার কোমলমতি শিশুদের স্কুলের পড়া বাদ দিয়ে সাড়ে ৯টার দিকে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে অসহনীয় রৌদ্রে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অনেকেই ভাল মন্তব্য করেন নি। স্কুল, মাদরাসা ও কলেজের ছাত্র/ছাত্রী সহ শিকদের কাসের পড়া বাদ দিয়ে রাস্তায় নামতে হবে এ হুকুম কে দিয়েছেন তা বলছেন না কেউই। শিা অফিসারের নিকট জানতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।  

গোদাগাড়ীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দোড়ঝাপ
আব্দুল মালেক: উপজেলা পরিষদ  নির্বাচনে আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একাধিক প্রার্থীরা। ২০০৯ সালের তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ উপজেলায় আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও  এবার উভয় দলের একাধিক প্রার্থীরা জোরে সোরে মাঠে তোড়জোড় শুরু করেছে। তবে উভয় দলের তৃণমুল নেতাকর্মীরা একক প্রার্থীই প্রত্যাশা করছে। গোদাগাড়ী উপজেলায় গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দুইজন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম আতাউর রহমান খান ও জেলা যুবগীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ কলেজ প্রভাষক পদ হতে পদত্যাগ করে প্রার্থী  হলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়ে আতাউর রহমানকে সমর্থন দেন। তবে এবারের  নির্বাচনে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ৪র্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ উপজেলায় আওয়ামীলীগের মনোনয়নের জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান,আসাদুজ্জামান আসাদ,কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সদস্য বদিউজ্জামান,কাকনহাট পৌর মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মজিদ,গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম,পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। অপরদিকে বিগত নির্বাচনে উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গোগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন । এবার বিএনপির দলীয় প্রার্থী হতে ঘোষনা দিয়ে মাঠে কাজ করছেন,জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোদাগাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, পাকড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সদস্য আনারুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বাবু, তবে হযরত আলীর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে । আওয়ামীলীগের  মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করেন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন মুলত নির্ভর করছে সংসদ সদস্যের উপর। তবে এমপি যাকেই মনোনয়ন দেন না কেন এ উপজেলায় আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা মোটেও নেই। অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন মুলত নির্ভর করছে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের উপর। বিএনপির প্রার্থীরা বলেন ব্যারিষ্টার আমিনুল হক যাকেই প্রার্থী করবেন তার পইে আমরা কাজ করব। এেেত্র বিএনপির দলীয় মনোনয়নে এগিয়ে রয়েছেন গোদাগাড়ী পৌর সভার সাবেক মেয়র আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী। অন্যদিকে উপজেলায় প্রার্থী দিতে চায় জাতীয় পার্টি ও জামায়াত। এেেত্র জামায়াতের প্রার্থী হতে পারেন মাটিকাটা কলেজের প্রভাষক কামরুজজামান ও জাতীয় পার্টির বরজাহান আলী পিন্টু। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকল দলের ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে প্রায় ২০/২৫জন প্রার্থী।
 

 জামায়াত শিবির নয় আ.লীগই সংখ্যালঘু হামলায় জড়িত : বিবিসিকে হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

ডেস্ক : বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশ হিন্দু,বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় জামায়াত শিবির জড়িত এটা একটা শ্লোগানে পরিণত হয়েছে, বাস্তবে এমনটি নয় বরং আওয়ামী লীগই এর সাথে জড়িত।

বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িঘর এবং মন্দিরে হামলার ঘটনার পর বিবিসিকে তিনি একথা বলেন। সুব্রত চৌধুরী বলেন, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটলে সেটা এখন রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের উপর দোষ চাপানোর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনার একটি সংস্কৃতি চালু হয়ে গেছে।
‘এখন যেমন বলা হচ্ছে জামায়াত-শিবির এটা করেছে। এটা একটা শ্লোগান হয়ে গেছে। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সব জায়গায় জামায়াত-শিবির এসব হামলার সাথে জড়িত নয়। বরং আওয়ামী লীগের লোকজনই এসব হামলার সাথে জড়িত- সেটা আমরা দেখতে পেয়েছি’।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি জামায়াত-শিবিরই হামলা করে থাকে বা আর যেই করুক না কেন, সরকার কেন তাদের বিচার করছে না? মি: চৌধুরী বলেন, হামলার ঘটনা বন্ধ করতে প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা ব্যর্থ হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
বিভিন্ন সময় হিন্দুদের উপর হামলার বিচার না হলেও এবারে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর হামলাগুলোর বিচার হবে কিনা সেদিকে অনেকে নজর রাখছে।
বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার জন্য সরকারের দিক থেকে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে এসব ঘটনার সাথে সরকার দলীয় সমর্থকরাই জড়িত এবং তারা এঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্যে জাতিসংঘের প্রতিও আহবান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বিভিন্ন সময় আক্রমণের ঘটনায় সরকার ও বিরোধী জোটের  এরকম পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেখা গেলেও অতীতে কখনই হামলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। হিন্দুদের বাড়িঘর এবং মন্দিরে হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো বিভিন্ন সময় দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে।
পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরকে দায়ী করেছে। কিন্তু বিচার নেই। মানবাধিকারকর্মী আইনজীবী জেড আই খান পান্না মনে করেন, বিভিন্ন সময় হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনাগুলো রাজনীতির আবর্তে হারিয়ে গেছে।‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে এসব হামলা হয় বলে এর কোন বিচার নেই’।
মি: পান্না আরো বলেন, হিন্দুদের উপর যে হামলা হয় তার প্রতিটির পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ মি: পান্না বলেন, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের পর হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া ২০১৩ সাল এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা বিশ্ববাসী স্বচক্ষে দেখেছেন।
তিনি বলেন, নিন্দা জানানো এক বিষয় আর বিচার করা ভিন্ন বিষয়।
মূলত ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ড দেয়ার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা হয়।
এজন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দোষারোপ করেছে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপিকে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপি পাল্টা বলেছে সরকার দলের ক্যাডাররা  হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ করে বিরোধীদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।
ঘটনা বন্ধ করতে প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা ব্যর্থ হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
বিভিন্ন সময় হিন্দুদের উপর হামলার বিচার না হলেও এবারে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর হামলাগুলোর বিচার হবে কিনা সেদিকে অনেকে নজর রাখছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় সরকার জিরো টলারেন্স বা কোন ছাড় না দেবার নীতি অনুসরণ করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামালউদ্দিন আহমেদ জানান, হিন্দুদের উপর হামলাগুলোর বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বিভিন্ন জেলার পুলিশকে এরই মধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মি: আহমেদ জানান, প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী দ্রুত বিচারের উদ্যোগ নেয়া হবে। কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিচ্ছেন প্রত্যেকটি হামলার ঘটনায় আলাদা আলাদা মামলা হবে।
পাশাপাশি ২০০১ সালের নির্বাচনের পর এবং বিভিন্ন সময় হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনাগুলোর বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যায় কিনা সেটিও সরকার খতিয়ে দেখছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

 

 মুরাদ জং-এর সব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রানা!

murad-and-rana-87999bh.jpgবিশেষ প্রতিনিধি: সাভারে ভবন ধসের ঘটনার মূল হোতা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা র‌্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর তার কৃতকর্মের সব ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধানের কাছে। সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদের সব রকম অপকর্মের সঙ্গে জড়িত বলেও জানান রানা।রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান সোমবার সকালে সাভারের ধসে যাওয়া ভবন দেখতে এসে জানান, আটকের পর যশোরের বেনাপোল থেকে সড়ক পথে যশোর বিমানবন্দরে নিয়ে আসার সময় গাড়িতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন র‌্যাবের গোয়েন্দারা।
জিজ্ঞাসাবাদে রানা র‌্যাবকে জানান, সাভারে সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ভূমি দখলের জন্য যে সমস্ত সন্ত্রাসীদের পাঠানো হতো, তার প্রধান কাজটি করতেন রানা নিজে। পাশাপাশি সাভারে মাদকের একচেটিয়া রমরমা ব্যবসা, ঝুঁটের ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভূমিখলসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস ও বাড়ির মালিককে হুমকি-ধামকি দিয়ে টাকা আদায় করতেন সে।
আর এজন্য সাভার থানার ওসি আসাদুজ্জামান, দারোগা কায়সার মাতুব্বার ও বিভিন্ন সময়ে সিভিল টিমের দায়িত্বে থাকা সদস্যদের নিয়মিত মাসোহারা দিতেন রানা।
কী পরিমাণ টাকা দিতেন র‌্যাবের এমন প্রশ্নের জবাবে রানা সাভার থানার ওসিকে মাসে ৫০ হাজার, কায়সার মাতুব্বারকে ২০ হাজার, ও সিভিল টিমকে ১০ হাজার টাকা এবং ঢাকা জেলা ডিবিকে প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। টাকার পাশাপাশি তার মার্কেট রানা প্লাজার বিভিন্ন দোকান থেকে শাড়ি-কাপড়, শার্ট-প্যান্ট উপঢৌকন হিসেবে পাঠিয়ে দিতেন। ঘটনার আগের দিনও সাভার থানার কয়েকজন দারোগা তার মার্কেট থেকে বেশকিছু কাপড় নিয়ে যান।
এছাড়া প্রতিমাসে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং উপলক্ষে দলের নেতাদের বিভিন্নভাবে আপ্যায়ন, ব্যানার, পোস্টার লিখে দিয়ে নেতাদের খুশি রাখতেন তিনি।
দলের পদ নিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে, রানা র‌্যাবকে জানান, ২৫ লাখ টাকা সাংসদ মুরাদ জংকে দিয়ে যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদটি তিনি নেন। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ নিয়ে মাদক আর সন্ত্রাসের রাজত্ব করতেন তিনি।
মাদক ব্যবসা প্রসঙ্গে রানা র‌্যাবকে বলেন, যুবলীগের নেতা হওয়ার সুবাদে পুরো সাভার এলাকায় ফেন্সিডিল ও ইয়াবার পাইকারি ব্যবসা করতেন তিনি। আর এ জন্য তার ১০/১৫ জন সন্ত্রাসীকে নিয়মিত কাজে লাগাতেন।
ভবন ধসের পর রানা সাংসদসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে কয়েক দফায় ২০/২২ লাখ টাকা দিয়েছিলেন, ঘটনা ম্যানেজ করতে। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা রানা জেনেছেন সাভার থেকে পালিয়ে ফরিদপুর যাওয়ার পর। ফরিদপুর পৌঁছে রানা জানতে পারেন যে, তার ভবনে কয়েকশ মানুষ মারা গেছেন।
র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, গ্রেপ্তারের পর খুব ভয়ে ছিল রানা। পরে কিছুক্ষণ কথা বলার পর স্বাভাবিকভাবে সব কিছু স্বীকার করে।
উল্লেখ্য, আটকের পর রানাকে রোববার বিকেলে র‌্যাবের হেলিকপ্টারে করে ঢাকা আনার পর রাতে ঢাকা জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

 
এরশাদের চোখে ঘুম নাই.
বিশেষ প্রতিবেদক : অস্থিরতায় ভুগছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। নানা কারণে এ অস্থিরতা। একদিকে ক্ষমতায় যাওয়ার মোহ। অন্যদিকে ঘরে-বাইরে চাপ। ‘কুল রাখি না শ্যাম রাখি’ অবস্থায় একেক সময় একেক কথা বলছেন এরশাদ। আর এসব কারণেই তার ঘুম আসে না- এমন মন্তব্য দলীয় ঘনিষ্ট সুত্রের। দলীয় নেতা-কর্মীদের সন্তুষ্ট রাখতে বারবার একক নির্বাচনের ঘোষণা দিচ্ছেন। বিরোধীদলীয় জোটকে খুশি করতে বলছেন- দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। বড় কোন দল নির্বাচনে না গেলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। আগামী নির্বাচনে সরকারের ভরাডুবি হবে। সামনের নির্বাচনে সরকার ১০০ আসনও পাবে না। আবার বলছেন, সরকারের জনপ্রিয়তা ১০ ভাগও নেই। অপরদিকে জেলে যাওয়ার ভয়ে এরশাদ মেনে চলছেন সরকারের প্রেসক্রিপশন। বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতির জন্য কলঙ্কতিলক। এ ব্যবস্থা জাতীয় পার্টি সমর্থন করে না। জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। যে কোন পরিস্থিতিতে জাপা নির্বাচনে যাবে। পার্টির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এরশাদের অস্থিরতার কারণ আন্তর্জাতিক মহল বিশেষের পরামর্শ। ওইসব মহলের যারা এরশাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন তারা আগামী নির্বাচনের জন্য শক্তিশালী প্রার্থী দাঁড় করানোর পরামর্শ দিয়েছেন তাকে।
জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, এরশাদ যখনই সরকারের সমালোচনায় মুখর হন তখনই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসে নানা চাপ। তখন কিছুদিন বন্ধ রাখেন সমালোচনা। চাপমুক্ত হতে তিনি একেক সময় গ্রহণ করেন একেক কৌশল। গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে এরশাদ সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন একনাগাড়ে। ১২ই জানুয়ারি নীলফামারীর এক সমাবেশে এরশাদ বলেন, শিগগিরই আমরা মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসবো। ৮ই নভেম্বর সিলেট সার্কিট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সময় হলেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে এসে একক নির্বাচন করবো। ৪ঠা নভেম্বর টাঙ্গাইলে এক নির্বাচনী জনসভায় বলেন, বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডে মানুষ হতাশ। ৪ বছরে দেশে কোন উন্নয়ন হয়নি। ঘরে থাকলে খুন আর বাইরে থাকলে গুমের ঘটনা ঘটছে। মানুষ এ অবস্থার পরিবর্তন চায়। ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার ওয়াদা করে সরকার ক্ষমতায় এলেও চাকরি হচ্ছে টাকা ও মন্ত্রীদের সুপারিশে। ধারাবাহিকভাবে এরশাদের এসব বক্তব্যের পাশাপশি চাঙ্গা হতে থাকে আদালতে ঝুলে থাকা তার মামলাগুলো। ১০ই জানুয়ারি আদালতে মঞ্জুর হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। ওই মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮শে ফেব্রুয়ারি। আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি তাকে রাডার ক্রয় দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হবে। এ দু’টি মামলার মধ্যে মঞ্জুর হত্যা মামলা নিয়ে এরশাদ বেশ বিচলিত বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের মাধ্যমে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সম্প্রতি এরশাদকে বলা হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনে বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোট অংশ না নিলেও জাতীয় পার্টিকে অংশ নিতে হবে। অন্যথায় তাকে জেলে যেতে হবে। এ হুমকির পর সরকারের মন জয় করতে এরশাদ গ্রহণ করেছেন নতুন কৌশল। নির্বাচনের প্রায় ১ বছর বাকি থাকতেই তিনি আগামী নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা শুরু করেছেন। অথচ কয়েক দিন আগেও এরশাদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আগামীতে ওয়ান ইলেভেনের মতো সরকার আসতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন। নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই এরশাদ ৯৩ জন প্রার্থীর মনোনয়ন ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ২৮শে জানুয়ারি ৩২ জন এবং ২৯শে জানুয়ারি ৬১ জনের নাম ঘোষণা করেন। তবে কৌশলগত কারণে এরশাদ রংপুর বিভাগ থেকে কারও নাম ঘোষণা করেননি। ৯৩ জনের নাম ঘোষণার পর এরশাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে। শিগগিরই অন্য প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হবে।
জাতীয় পার্টির একজন প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, প্রার্থীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে এ বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, বিরোধী দলের কেউ নির্বাচনে আসুক আর না আসুক জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে। সরকারের কাছ থেকে চাপমুক্ত থাকার কৌশল হিসেবেই কেবল এরশাদ এত আগে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছেন। পার্টির এক সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য বিষয়টিকে অর্থহীন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবে এরশাদ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ দেয়ার মতো নেতারা এখন এরশাদের কাছে ভিড়তে পারছেন না। তারা এরশাদের কাছ থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করছেন। এরশাদ কেবল ২ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। যারা পরামর্শ দিচ্ছেন তারা রাজনৈতিকভাবে খুবই অদূরদর্শী। এ কারণেই এরশাদ একেক সময় একেক কথা বলছেন। এতে একদিকে যেমন দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি ইমেজ ক্ষুণœ হচ্ছে এরশাদের।
অপর এক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে না। যে কোন একটি জোটে থেকেই নির্বাচন করবে। কারণ, পার্টির মূল লক্ষ্য যে কোন মূল্যে ক্ষমতার মধ্যে থাকা। এ ক্ষেত্রে ১৮ দলীয় জোটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে নির্বাচন করার সম্ভাবনা বেশি। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোট নির্বাচনে না গেলে জাতীয় পার্টি তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেবে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনে যাবে জাপা। তখন সংসদে প্রধান বিরোধীদলের নেতা হতেও এরশাদের আপত্তি থাকবে না। পরিস্থিতি প্রতিকূলে থাকলে জাপা নির্বাচনে না-ও যেতে পারে। এখন এরশাদ যেসব সিদ্ধান্ত বা বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন তা কেবলই চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে। সম্ভাব্য নির্যাতন-নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচার জন্যেই এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিচ্ছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী অনেক আগে থেকেই মহাজোট ছাড়তে এরশাদকে চাপ দিয়ে আসছেন। পার্টির চেয়ারম্যানের মুখপাত্র প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি নির্বাচন হবে। কারণ, নির্বাচন না হলে দেশে অনির্বাচিত সরকার আসবে। এমন সরকার কারও কাম্য হতে পারে না। তিনি বলেন, বড় দু’টি দলের প্রার্থীরা সব সময় মাঠে থাকেন। আমরা তুলনামূলকভাবে ছোট দল। আমাদের প্রার্থীরা সব সময় মাঠে থাকেন না। তাই আগে নাম ঘোষণা করে আমরা প্রার্থীদের মাঠে থাকার সুযোগ করে দিচ্ছি। কোন মনোনীত প্রার্থীর পারফরমেন্স ভাল না হলে নির্বাচনের আগে তিনি বাদও পড়তে পারেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের সংগঠন দুর্বল। সংগঠনকে শক্তিশালী করতেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। যেসব আসনে এখনও প্রার্থীদের নাম মনোনয়ন করা হয়নি সেসব আসনে শিগগিরই মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে এরশাদ আমেরিকা থেকে ফেরার আগে নতুন করে আর কোন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে না। একই ধরনের তথ্য জানিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় জানান, ৫ই ফেব্রুয়ারি এরশাদ আমেরিকা যাচ্ছেন। ৭ই ফেব্রুয়ারি তিনি আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘আমেরিকান ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এ অংশ নেবেন। সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করবেন। ১৫ই ফেব্রুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তবে দেশে ফিরতে আরও ৩-৪ দিন বেশি সময় লাগতে পারে। দলীয় চেয়ারম্যান দেশে ফেরার পর জাতীয় পার্টি নাটকীয় কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন

k.jpgস্টাফ রিপোর্টার: মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২। তার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণীত হয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। দুটিতে যাবজ্জীবন এবং তিনটিতে ১৫ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এম ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালে সকাল সাড়ে ১০টার পর ১৩২ পৃষ্টার এই রায় পড়া শুরু হয়। রায়ের ৩৫ পৃষ্টার সারসংক্ষেপ এর প্রথম অংশ পড়েন বিচারপতি শাহিনুল ইসলাম। দ্বিতীয় অংশ পড়েন বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া।
চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ওবায়দুল হাসান। অভিযুক্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করেন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের প্রথম অংশে মুক্তিযুদ্ধের সময় আবদুল কাদের মোল্লার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। দ্বিতীয় অংশে তার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে ছয়টি প্রমাণীত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ প্রমাণীত হওয়ায় চূড়ান্ত রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
এর আগে সকাল ১০ টার দিকে আবদুল কাদের মোল্লাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সাদা পাঞ্জাবি পড়া কাদের মোল্লার হাতে ছিল একটি পানির বোতল। রায় পড়া শুরুর আগে কাদের মোল্লা কথা বলার জন্য ট্রাইব্যুনালের অনুমতি চান। তবে ট্রাইবুন্যাল তাকে কথা বলার অনুমতি না দিয়ে রায় পড়া শুরু করেন।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে গতকাল থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াতের সদস্যদেরও ট্রাইব্যুনালে মোতায়েন করা হয়।
সকালে ব্যাপক তল্লাশি করে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে দেয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের আশপাশেও ছিল কয়েক স্থরের নিরাপত্তা।
প্রায় তিন বছর আগে শুরু হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে এ প্রথম জামায়াতের কোন শীর্ষ নেতার ব্যাপারে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। এর আগে দলটির বহিষ্কৃত নেতা মাওলানা আবুল কালাম আযাদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছে ট্রাইব্যুনাল। তিনি বর্তমানে পলাতক। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মামলার তদন্ত শুরু হয় ২০১০ সালের ২১শে জুলাই। একই বছরের ২রা আগস্ট তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই বছর ১৮ই ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এ মামলাটি প্রথমে ট্রাইব্যুনাল-১এ বিচারাধীন ছিল। পরে তা দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়। এ মামলায় কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়, কাদের মোল্লার নির্দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে আটক মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে একাত্তরের ৫ই এপ্রিল গুলি করে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ২৭শে মার্চ কাদের মোল্লা তার সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তার মা ও দুই ভাইকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাসায় গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, ২৯শে মার্চ বিকালে আরামবাগ থেকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের বাসস্ট্যান্ডে গেলে কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা তাকে ধরে গলা কেটে হত্যা করে। এছাড়াও আরও তিনটি ঘটনায় হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে আবদুল কাদের মোল্লার রায়কে ঘিরে সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই দেশজুড়ে হরতাল পালন করছে জামায়াতে ইসলামী। কাল থেকে লাগাতার হরতালের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে দলটি।
রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে ট্রাইব্যুনালের পাশে হাইকোর্টের সামনে বিভিন্ন সংগঠন বিচারের পক্ষে কর্মসূচি পালন করে। এসব সংগঠনের কর্মীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেন।

‘রায় পড়ে পরবর্তী পদক্ষেপ’

mah.jpgডেস্ক: জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের এটর্নি জেনারেল এডভোকেট মাহবুবে আলম বলেছেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ১, ২ ও ৩ নম্বর অভিযোগে কাদের মোল্লাকে ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এবং ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। কিন্তু দেয়া হয়নি। আমরা রায় পড়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। আমি এটর্নি জেনারেল হিসেবে প্রসিকিউশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।





1 comment:

  1. আপনাকে অসঙ্খ ধন্যবাদ ভাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস শেয়ার করেছেন

    ReplyDelete